গবেষণায় দেখা গেছে, সাদা চালের চেয়ে কালো চালের ব্রাণে ২-৩ গুণ খনিজ পদার্থ বিশেষত আয়রন ও জিংক বিদ্যমান। এগুলোর বাইরের আবরণে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন এবং অন্যান্য ফাইটো-কেমিক্যাল উপাদান এ চালকে অনন্য করেছে। অ্যান্থোসায়ানিনের উপস্থিতির কারণে ব্রাণের রং লাল হয়ে থাকে।
রঙিন চালের পুষ্টিগুণের বিষয়ে প্রধান গবেষষক বলেন, এ চাল শুধু দেখতে সুন্দরই নয়, এর রয়েছে অপরিসীম পুষ্টিগুণ এবং ওষুধি গুণাবলি। কালো, লাল, বেগুনি, এমনকি বাদামি রঙের এ চাল শুধু তার বাহারি চেহারার জন্য নয়, বরং স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্যও দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। রঙিন চাল থেকে ভাত, খিচুড়ি, বিরিয়ানি থেকে শুরু করে মুড়ি, চিঁড়া এবং বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরিও সম্ভব। সাধারণ সাদা চালের তুলনায় এতে বেশি পরিমাণে প্রোটিন, আঁশ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে।
চাষাবাদ ও ফলন সম্পর্কে প্রধান গবেষক জানান, রঙিন চাল চাষ সাধারণ ধানের মতোই সহজ। এটি মূলত আমন মৌসুমে চাষ হয়, তবে বোরো মৌসুমেও ফলন সম্ভব। দোআঁশ মাটি থেকে শুরু করে কাদামাটিতেও এ ধান ভালো জন্মায়।
উপযুক্ত সার প্রয়োগে (ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি) ফলন প্রায় সাড়ে তিন টন পর্যন্ত হতে পারে। যদিও এর ফলন সাধারণ সাদা ধানের তুলনায় কিছুটা কম, তবে বাজারমূল্য অধিক হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে। এ ধানের একটি চ্যালেঞ্জ হলো কম রাসায়নিক সার সহনশীলতা এবং পাখি বা রোগবালাইয়ের প্রতি সংবেদনশীল। তাই উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন এবং আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন রয়েছে।
গবেষণার বিষয়ে সহযোগী গবেষক অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন-২ বলেন, রঙিন চালের পুষ্টি উপাদান মূল বাইরের আবরণে থাকে। সাধারণ মিলে ছাঁটাইয়ের ফলে এর পুষ্টিগুণ কিছুটা কমে যেতে পারে। তবে বেশি পরিমাণে কমবে না। সবচেয়ে ভালো হয় ঢেকিতে ছাঁটাই করে খাবারের জন্য ব্যবহার করা।