লাইটার জাহাজসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে প্রায় ১৮০০ লাইটার জাহাজ পণ্য পরিবহণ করছে। আমদানিকারকরা পণ্য খালাস না করে প্রায় ২০ শতাংশ লাইটার জাহাজকে গুদাম হিসাবে ব্যবহার করছেন। সেই হিসাবে প্রায় ৩৬০ লাইটার জাহাজ তাদের দখলে রাখায় নৌপথে সিমেন্ট, বালু, ক্লিংকারসহ অন্য পণ্য পরিবহণে গতি কমেছে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, ফের সরকারিভাবে সয়াবিন তেলের দাম বাড়াতে কোম্পানিগুলো কারসাজি করছে। তেল সরবরাহ এখনো স্বাভাবিক করছে না। তিনি জানান, মাদার ভেসেল থেকে লাইটার জাহাজে পণ্য মজুত করে পরে গুদামে নেওয়া নিচ্ছে। এভাবে সময় পার করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। ঈদ ঘিরে এ সংকট কাজে লাগিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে পাঁয়তারা করছে। সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে নজর দিতে হবে। ভোজ্যতেলের সংকট, দাম বৃদ্ধি ও ভোক্তাদের হাহাকার দেখে উদ্বিগ্ন ছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনও। এজন্য খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে চার দফায় বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফরিদা খানম। সর্বশেষ মঙ্গলবার টাস্কফোর্সের সভা করে ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের ডিসি সতর্ক করে দেন।
ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনষ্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ মুস্তাফা হায়দার বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী সয়াবিন তেলের দাম সময়ে সময়ে বৈশ্বিক বাজার ও অভ্যন্তরীণ খরচের সঙ্গে সমন্বয় করার কথা। এখন তা ১৫ দিন পরপর সমন্বয় করার কথা। বৈশ্বিক বাজারে তেলের দর, আমদানি খরচ, পরিবহণ ও বিভিন্ন ধাপে সরকারের ভ্যাট যুক্ত করে সয়াবিন তেলের দর নির্ধারণ করা হয়। আমরা বলেছি সরকারের নীতিমালা মেনেই দর সমন্বয় করতে। তবে সরকার রোজায় পণ্যটির দাম বাড়াতে চাইছে না। সেজন্য রোজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভ্যাট ছাড় অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে রমজানে চাহিদার পরিমাণ ৩ লাখ টন। দেশে ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে ৫ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫৪৮ টন। এছাড়া দেশীয় উৎপাদন করা হয় ২ লাখ ৫০ হাজার টন। আর আমদানি পর্যায়ে এখনো পাইপলাইনে আছে ৮ লাখ ১২ হাজার ৫৬৫ টন। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য নিম্নমুখী হওয়ায় স্থানীয় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ট্যারিফ কমিশনের এ প্রতিবেদন অনুযায়ী সয়াবিন তেলের দাম নিম্নমুখী হওয়ার কথা। কিন্তু উলটো বাড়ছে।