আপন বোন ও বোন জামাইয়ের বিরুদ্ধে সিলেট নগরীর আম্বরখানা চাষনী পীর মাজার রোডস্থ নিজের বাসা দখল ও ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ করেছেন জগন্নাথপুরের লোহারগাঁও গ্রামের মালিক উদ্দিনের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন নামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী এক নারী। ফাতেমা খাতুনের পক্ষে এমন অভিযোগ এনে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে মামলার আবেদন করেছেন তার ভাগ্নে তারেক মিয়া। এছাড়াও ওই বাসার দখল ফিরে পেতে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরেও একটি আবেদন করেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফাতেমা খাতুন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ১৬ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বশরীরে বা আইনজীবির মাধ্যমে উপস্থিত থেকে শুনানীতে অংশগ্রহণ করতে আদেশ প্রদান করা হয়েছে।
মামলার আবেদন সুত্রে জানা গেছে, সিলেট নগরীর আম্বরখানা মৌজার- এস এ ৯৬৮ দাগের উপর নির্মিত দুইতলা বাসার মোট ০.০৮ একর জমির মধ্যে পশ্চিমাংশের ০.০৪ একর জমি ফতেমা খাতুন ও তার স্বামী মলিক উদ্দিনের ক্রয় করা। পূর্বাংশের ০.০৪ একর ভুমি ফাতেমা খাতুনের পিতা-মাতার ক্রয় করা। পুরো জমিতে বাসা নির্মাণকালে ফাতেমা খাতুন, তার স্বামী এবং তার পিতামাতা শরিকানে দুইতলা বাসার উপরতলার দক্ষিনাংশ ও উত্তরাংশ সমান ২ অংশে ভাগ করে বাসাটি নির্মাণ করেন এবং মধ্য ভাগে সিড়ি রেখে নীচ তলার অর্ধেক পূর্বাংশে জমিতে সিড়ির উত্তরাংশে ও দক্ষিনাংশ ২টি বাসা নির্মান করেন। নীচ তলার পশ্চিমাংশ খালি রাখেন।
পরবর্তীতে পিতা মাতার অংশে আম-মোক্তার বলে ফাতেমা খাতুনের ভগ্নি হালিমা বেগম আমমোক্তার হিসাবে দেখাশুনার দায়িত্ব পান। পরে এ নিয়ে জঠিলতা দেখা দেয়। বাধ্য হয়ে ফাতেমা বেগম সিলেটের বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে স্বত্ব বাটোয়ারা ২০০/২০১৮ ইং নং মামলা করেন। মামলা বিচারাধীন থাকাকালে উভয় পক্ষের মধ্যে সোলেনামা পেশ করা হলে, ফাতেমা খাতুন ও তার স্বামী নীচতলা ও উপরতলার উত্তরাংশে ভাগ পান এবং দক্ষিনাংশের উপরতলা ও নীচতলা তাদের পিতামাতা পান। ফাতেমা খাতুন তার উত্তরাংশের উপরতলায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করে শেষে তালাবদ্ধ করে ও নীচতলার বাসা জনৈক মামুন আহমদকে ভাড়াটিয়া হিসেবে রেখে যুক্তরাজ্যে তার কর্মস্থলে চলে যান। তার পিতা মাতা তাদের দক্ষিনাংশের উপরতলা ও নীচতলায় জনৈক মমিন মিয়া গং কে ভাড়া প্রদান করে তারাও যুক্তরাজ্যে চলে যান।
এরই মধ্যে গত বছরের ২১ অক্টোবর ফাতেমা খাতুনের বোন রহিমা খাতুন ও বোনজামাই মিটু মিয়া ফাতেমা খাতুনের রুমগুলির তালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে ষ্টিলের আলমিরার ড্রয়ার থেকে নগদ দুই লক্ষ টাকা, ৭ ভরি স্বর্নালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ঘরের ওয়াল, এসি, এয়ারকুলার, ফার্নিচার ও ভাউন্ডরী দেওয়ালসহ ব্যাপক ভাঙচুর করে পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। ঘটনার পরদিন তার ভাগ্নে তারেক মিয়া ফোন করে বিষয়টি ফাতেমা খাতুনকে জানালে তিনি আইনের স্বরণাপন্ন হওয়ার যথাযথ পরামর্শ দেন।
এবিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে দাখিলকৃত মামলার আবেদনের বাদীপক্ষের আইনজীবি এডভোকেট শহিদ আহমেদ বলেন, আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য এসএমপির বিমানবন্দর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, বাসার দখল ফিরে পেতে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে ফাতেমা খাতুনের দাখিলকৃত আবেদনের শুনানী আগামী ১৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে বলে জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে।
তবে, বাসা দখল ও লুটপাটের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত ফাতেমা খাতুনের ও বোনজামাই মিটু মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি একশো ভাগ মিথ্যা। ওই বাসায় যে ভাউন্ডরী ওয়াল দেয়া হয়েছে তা মধ্যস্থতাকারী শালিসানদের মাধ্যমেই দেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে এসএমপির বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, বিষয়টি দুপক্ষ মিলে সমাধানের দিকেই যাচ্ছে, তাছাড়া মামলার তদন্তকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে, আমরা দ্রুত রিপোর্ট দিয়ে দেবো।