তিনি আরও লিখেছেন, কিন্তু শাহবাগে অংশ নেওয়া অনেক ছাত্র-তরুণই তাদের ভুল বুঝতে পেরে মুজিববাদী বয়ানের বাইরে যেতে চেয়েছেন। গত কয়েক বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা অংশীজন ছিলেন। আহতও নিহত হয়েছেন। তারা আমাদের সহযোদ্ধা। তারা আমাদের কমরেডস বটেন! এ অভ্যুত্থানে শক্তিশালী ভূমিকা রেখে তারা লীগ ও মুজিববাদের পরাজয় নিশ্চিত করেছেন। তারা ইতোমধ্যে তাদের রাজনৈতিক ভুলের প্রায়শ্চিত্ত তথা কাফফারা আদায় করেছেন।
মাহফুজ আলম লিখেছেন, আমরা অভ্যুত্থান-উত্তর সময়ে উপনীত হয়েছি। এখানে জামায়াতকে বা শিবিরের কর্মীদের ‘রাজাকার’, ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ বলে বধযোগ্য করার যে বয়ান সেটার বিরোধী আমরা। তেমনি, শাহবাগের ইসলামফোবিয়ার বিরুদ্ধেও আমাদের অবস্থান। এ ইসলামফোবিয়ার শিকার আমি নিজে হয়েছি। শাহবাগের সাংস্কৃতিক বন্দোবস্ত বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ঊন-মানুষে পরিণত করেছিল।
তথ্য উপদেষ্টা আরও যোগ করেন, তবে পুরাতন ‘শাহবাগী’, যারা এখনো শাহবাগের প্রাণভোমরা- মুজিববাদ, ভারতপন্থা ও শেখ পরিবারের প্রতি আনুগত্যকে নিজেদের আদর্শ বলে মনে করেন, তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া উচিত হবে না। এরাই গুম ও গণহত্যার উস্কানি দিয়েছিল ও ন্যায্যতা তৈরি করেছিল। জুলাই গণহত্যার সময়ও এরা চুপ ছিল, কেউ কেউ বৈধতা উৎপাদনে ব্যস্ত ছিল। বিদেশ থেকে এখনো যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে সাফাই গাইছে, এদের একটা বড় অংশ শাহবাগের ফ্যাসিবাদী। এরা জনগণের শত্রু, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের শত্রু, গণ- অভ্যুত্থানের শত্রু। এদের বিচার শুরু হয়েছে, শেষও হবে।
উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, অভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশে শাহবাগে বেড়ে ওঠা মবোক্রেসি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি সব পক্ষকেই বাদ দিতে হবে। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও সহনাগরিকদের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ সংলাপ ও সংহতির দিকে সবাইকে এগুতে হবে। শাহবাগের ছাত্র-তরুণ যারা মুজিববাদের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছেন, ‘শাহবাগী’ ট্যাগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মব উস্কে দেওয়া বা বিভেদ তৈরি সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। রাজনৈতিক ‘Vendetta’ (প্রতিহিংসা) থেকে হরেদরে সবাইকে শাহবাগী বলা বন্ধ করতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক লড়াই থাকবেই। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমাদেরকে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া ও মৈত্রী বাড়াতে হবে, শত্রু কমাতে হবে এবং চিহ্নিত শত্রুর দীর্ঘমেয়াদে পরাজয় নিশ্চিত করতে হবে।